ঢাকা, বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৪৩ পূর্বাহ্ন
লকডাউনের ৮ম দিন : সিলেটে নানা অজুহাতে বাহিরে মানুষ
রুবেল আহমদ, সিলেট থেকে

দৈনিক ডাকঃ করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সপ্তাহব্যাপী কঠোর লকডাউনের প্রথম দফা শেষ হয়েছে বুধবার (৭ জুলাই)। আর ঘোষিত দ্বিতীয় দফার লকডাউন শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) থেকে।

বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সিলেটে মানুষের চলাচল বাড়তে দেখা গেছে। তবে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে সড়কের মোড়ে মোড়ে কড়াকড়ি অবস্থানে সেনা সদস্য, পুলিশ, বিজিবি। গত কয়েক দিনের মতো বৃহস্পতিবার সিলেটে লকডাউন ভঙ্গ করায় গাড়ি চালককে জরিমানা করা হয়। আবার অনেকে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় জরিমানা করছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। যারা ঘরের বাহিরে বের হয়েছেন, তারা নানা অজুহাত তুলে ধরেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, অন্যদিনের চেয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সিলেটে রিকশা, প্রাইভেট যানবাহন ও বিচ্ছিন্ন ভাবে কিছু সিএনজি অটোরিকশা চলতে দেখা গেছে। এছাড়া সড়কে সেনা সদস্য, বিজিবি ও পুলিশের কড়াকড়ি অবস্থানে পণ্যবাহী ট্রাক, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহৃত যানবাহনের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। যানবাহন নিয়ন্ত্রণে সিলেটের প্রবেশদ্বার দক্ষিণ সুরমা, বিমানবন্দর সড়ক, শাহপরান এলাকাসহ বিভিন্ন সড়কে বাঁশ দিয়ে সড়কের প্রবেশ পথ আটকে দিয়েছে পুলিশ। তবে যারা রিকশা ও মোটরসাইকেল নিয়ে চলাচল করেছেন তাদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। এদিকে সিলেটের অধিকাংশ এলাকার মূল সড়ক ফাঁকা দেখা গেলেও অলিগলিতে জনসমাগম দেখা গেছে। অলিগলিতে কিছু চায়ের ও মুদি দোকান খোলা থাকায় মানুষ ঘর ছেড়ে বের হয়েছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কঠোর লকডাউনে সরকারি বিধি-নিষেধ মানাতে সচেষ্টা রেয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। মানুষকে ঘরে রাখতে জেল-জরিমানাও করছেন জেলা প্রশাসন পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত। এরপরও নানা ছুতায় ঘর থেকে বেরোচ্ছে মানুষ। অকারণে বের হয়ে জেরার মুখে পড়ছেন সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব-পুলিশের। লকডাউনের সপ্তম দিনও বুধবার অনেকটা ঢিলেঢালা কেটেছে। এদিন সকাল থেকে সিলেটের সড়কগুলোতে যানবাহনের আধিক্য এবং মানুষ অবাদে চলাচল করতে দেখা গেছে।

জানা যায়, লকডাউনের সপ্তম দিনে (বুধবার) লকডাউন পালন ও স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দিন ব্যাপী সিলেট মহানগর ও সকল উপজেলায় ৩৫ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট একযোগে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছেন। মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকালে নানা অপরাধে ১৫৪টি মামলা করা হয়। এ সময় ১ লাখ ৫১ হাজার ৫০ টাকা জরিমানাও করা হয়। প্রায় প্রতিদিনই সিলেটে লাখ টাকার উপর জরিমানা করছে প্রশাসন।
কোর্ট পরিচালনা কাজে আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও সার্বিক সহায়তায় পুলিশ, সেনাবাহিনী, আনসার ও বিজিবির টিম নিয়োজিত ছিল। এদিকে লকডাউন বাস্তবায়নে বুধবার সিলেট মহানগর পুলিশের অভিযানে ৫৮টি যানবাহনে মামলা ও ৭৬টি যানবাহন আটক করা হয়। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৮১ হাজার ২শ টাকা জরিমানা করা হয়।

সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার আশরাফ উল্লাহ তাহের বলেন, সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে পুলিশ মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। তবে বাঁচতে হলে নিজে থেকে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। জনগণকে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

এদিকে গত ১ জুলাই সাত দিনব্যাপী কঠোর লকডাউনের মধ্যেও করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে সোমবার (৫ জুলাই) নতুন প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সময়সীমা আরো সাতদিনের জন্য বাড়ানো হয়। পূর্বের সকল বিধি-নিষেধ ও কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় সুরক্ষা স্মারকের নির্দেশনার অনুবৃত্তিক্রমে ৭ জুলাই মধ্যরাত থেকে ১৪ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত এ বিধি-নিষেধ আরোপের সময়সীমা বাড়ানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x