ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১০:৪৫ অপরাহ্ন
ঈশ্বরগঞ্জে সড়ক যেন মৃত্যুফাঁদ
তাপস কর,ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের মরিচারচর (চরাঞ্চল) এলাকার প্রবেশমুখ সড়কের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র নদ। তীব্র ভাঙনে নদে বিলীন হয়ে যাওয়া সড়কটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। যেখানে প্রতিনিয়ত বাড়ছে দুর্ভোগ ও দুর্ঘটনা। সড়কটির দুরবস্থা নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। কেননা, বিস্তীর্ণ এই চরাঞ্চলে নানা ধরনের সবজি উৎপাদিত হয়। কিন্তু সড়কের এ বেহাল দশার কারণে উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে চরাঞ্চলের মানুষদের। রাস্তার কারণে উৎপাদিত পণ্য পরিবহন না করতে পারায় তা পচে নষ্ট হচ্ছে। এলাকাটি ঘুরে দেখা গেছে, উচাখিলা বালুরঘাট থেকে মরিচারচরগামী সড়কের একপাশ নদে ধসে পড়েছে। ভাঙা অংশটি ৫০ থেকে ৬০ ফুট খাঁড়া হয়ে নদে গিয়ে মিশেছে। বছরের পর বছর বর্ষা মৌসুমে সড়কটি ভাঙনের শিকার হয়ে আসছে। এ ছাড়া বালুরঘাট থেকে মরিচারচর চৌরাস্তা বাজার পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার পিচঢালা রাস্তা জুড়ে তৈরি হয়েছে খানাখন্দ, উঠে গেছে কংক্রিট। ইটের খোয়া উঠে মাটিতে গর্ত হয়ে গেছে। বেহাল সড়ক দিয়েই বালুঘাট থেকে বালু বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য যান প্রতিনিয়ত চলাচল করে।

উল্লেখ্য, গত বছর ব্রহ্মপুত্র নদের তীব্র ভাঙনে নদে বিলীন হয়ে যায় সড়কের খানিকটা অংশ। ভাঙনের তীব্রতা রোধে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তাৎক্ষণিকভাবে ওই খাঁড়া অংশে বালুর বস্তা ফেলা হয়। এতে কোনোরকম যোগাযোগ ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয়েছিল। তবে এখন বর্ষা মৌসুমে ভয়ানক শঙ্কায় রয়েছে এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে তানিয়া জান্নাত তৃণা নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, এই রাস্তা দিয়ে অটো ও রিকশা করে যেতে ভয় লাগে। রাস্তার খানাখন্দ অনেক সময় রিকশা উল্টে যায়। তাছাড়া খানাখন্দতে সামান্য বৃষ্টি হলে পানি জমে থাকে। তখন পায়ে হেঁটে যাওয়াও কষ্টকর হয়ে যায়। রাস্তাটি সংস্কার করার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

স্থানীয় অটোরিকশা চালক মো. আল-আমিন মিয়া বলেন, দিনের বেলায় কোনোমতে চলাচল করতে পারলেও রাতের বেলায় ভীষণ ভয় হয়। কেননা একটু উনিশ-বিশ হলেই ৫০ থেকে ৬০ ফুট খাদের নিচে পড়ে যেতে হবে। কিছুদিন আগেও এক অটোরিকশা বাঁক নেওয়ার সময় আচমকা খাদে পড়ে যায়। এতে যাত্রীসহ চালক গুরুতর আহত হন। এ ছাড়া প্রায় সময়েই এখানে বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে বলেও জানান তিনি।

সাবেক ইউপি সদস্য মো. আব্দুল কাদির মিয়া বলেন, রাস্তাটির এমন বেহাল দশায় সব সময়ই দুর্ঘটনার প্রবণতা রয়েছে। সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।

উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. সেলিম খান বলেন,বালুরঘাট থেকে মরিচারচর চৌরাস্তা বাজার পর্যন্ত সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সড়কটি মজবুত করে সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।

উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) তৌহিদ আহমেদ বলেন, সড়কটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রকল্প তৈরি করে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাকির হোসেন বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের তীব্র ভাঙনে সড়কের একপাশ নদে ধসে পড়া ও বাকি অংশ খানাখন্দ তৈরি হওয়ায় সড়কটি বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x