রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার পাঁচ বছর আজ। তবে এখনো শেষ হয়নি ভয়াবহ এ হামলা মামলার বিচারকাজ।
হামলার পর একের পর এক জঙ্গিবিরোধী অভিযানের ফলে জঙ্গিরা বড় হামলার সক্ষমতা হারিয়েছে বলে দাবি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। তবে, জঙ্গিরা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে নিজস্ব যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলায় তা মোকাবিলা এখন বড় চ্যালেঞ্জ বলছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। আর জঙ্গি দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধির পরামর্শ তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের।
২০১৬ সালের ১ জুলাই। নৃশংসতা বিবেচনায় দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলা হয় রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয়। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তীক্ষ্ণ নজদারির কারণে কৌশল পরিবর্তন করে বড় ধরনের সশস্ত্র হামলায় চেয়ে লোন উলফ স্টাইলে হামলা এবং অনলাইনে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনায় নজর দেয় জঙ্গিরা। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের গবেষণা বলছে, জঙ্গিবাদে জড়িতদের ৮২ শতাংশই তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে উগ্রবাদে জড়িয়েছে। আটক হওয়া জঙ্গিরাও জানায়, অনলাইনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি এড়াতে টেলিগ্রাম বা সিগন্যাল অ্যাপের পর এনক্রিপ্টেড অ্যাপ ব্যবহার করে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি নিজস্ব যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তুলেছে তারা। যা মনিটরিংয়ের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নেই বলে দাবি তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষক সালাউদ্দিন সেলিম বলেন, নিজস্ব ডেভেলপার দিয়ে তারা এনক্রিপ্টেড অ্যাপ তৈরি করছে। আমরা এটাকে বলি এন টু এন ক্রিপশন। আসলে তারমানে দু’পক্ষের মধ্যে যখন আলোচনা হচ্ছে সেটা আর মনিটর করা যাচ্ছে না।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব) মোহাম্মদ আলী শিকদার বলেন, জঙ্গিরা সুযোগ পেলে বড় ধরনের ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করবে।
তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, উগ্রবাদবিরোধী তৎপরতা আর জঙ্গিবিরোধী অভিযানে বড় হামলার সক্ষমতা হারিয়েছে জঙ্গিরা।
কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপরতার কারণে জঙ্গিদের কার্যক্রম অনেকটাই আমাদের নিয়েন্ত্রণে রয়েছে।
এদিকে এখনো নিস্পত্তি হয়নি হোলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলা মামলার বিচারকাজ। করোনার পর আদালতের কার্যক্রম স্বাভাবিক হলে এ মামলা দ্রুত শুনানির চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, আমাদের ভার্চুয়ালি কোট চলছে, আশা করব এ বছর এ মামলার শুনানি করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।
এ হামলায় দুজন পুলিশ ও দেশি-বিদেশি নাগরিকসহ মোট ২২ জন নিহত হন। ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ৮ আসামির ৭ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করে আদালত।