ঢাকা, সোমবার ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:০৫ পূর্বাহ্ন
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান
মাহফুজ আলম নয়ন, মৌলভীবাজার

 মো: মাহফুজ আলম নয়ন: Association for Social Contribution and Educational Development সংক্ষেপে (Ascend)।  বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ড পরিচালনার মাধ্যমে সমাজে একটা পজিটিভ পরিবর্তন নিয়ে আসার পাশাপাশি শিক্ষা সেক্টরকে নিয়ে কাজ করার উদ্দেশ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের  শিক্ষার্থী হিসেবে ক্লাব করাটা কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

Ascend এর CEO শামীম হোসেন জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রবেশের সাথে সাথে বিভিন্ন অমুনাফাভোগী অর্গানাইজেশন এর সাথে যুক্ত হবার পর অভিজ্ঞতা অর্জন শুরু করেন, ক্লাবিং করার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের মানুষের সাথে যেমনি পরিচয় হয় তেমনি তাদের বিভিন্ন সেশন, ইভেন্ট করতে গিয়ে জানাশোনা বৃদ্ধি পায়। গতবছর ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সহায়তা করে এমন একটি সংগঠনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করেন এবং পরবর্তীতে এই স্টার্টআপটির জন্মদেন।

বেশ কিছু চিন্তাভাবনা থেকে  10 অক্টোবর 2020 এই স্টার্টআপ নিয়ে যাত্রা শুরু করেন। এতদিন যাবৎ এত এত সংগঠন করার পরে একটা সময় এসে তার মনে হয়েছে এই সংগঠনগুলোতে কিছু একটা মিসিং আছে। আমাদের শিক্ষার্থীদের আসলেই যে বিষয়গুলো প্রয়োজন সেটি পাচ্ছে না। যেখানে অধিকাংশ সংগঠন শুধুমাত্র নিজেদের প্রমোশন ও সম্মান ধরে রাখতে কাজ করছে সেখানে তার চিন্তা ছিল এমন কিছু করার যেখানে এই শিক্ষার্থীগুলো আসলেই প্রকৃত শিক্ষা এবং অভিজ্ঞতা পাবে। অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয় লেভেলে জব এক্সপেরিয়েন্স নিতে পারবে, থিওরিটিক্যাল শিক্ষা এবং প্র্যাকটিক্যাল শিক্ষা দুটি সমান গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারবে। এর পাশাপাশি যাতে জব মার্কেট সম্পর্কে ধারণা পায় এবং সেই অনুযায়ী নিজেদেরকে প্রস্তুত করতে পারে। শুধুমাত্র সরকারি চাকরি কিংবা বিসিএস একমাত্র ডেস্টিনেশন হতে পারে না, এই বিষয়টি অনুধাবন করতে পারে। কর্পোরেট জব এবং উদ্যোক্তা হওয়ার  দিকে যাতে তাদের ঝোঁক বৃদ্ধি পায়। এই বিষয়গুলো নিয়ে তারা যেন চিন্তা করতে পারে।

প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও শামীম হোসেন বলেন, ” অনেক বিষয় চিন্তা করে সর্বপ্রথম কিছু ছেলেপেলে নিয়ে আমি সংগঠনটির প্রাথমিক রূপ দাঁড় করাই। শুরু করেই স্টার্টআপ হিসেবে নিজেদেরকে আত্মপ্রকাশ করি নি বরং চেষ্টা করি আর পাঁচটা ক্লাবের মত করে অর্গানাইজেশনাল স্ট্রাকচার ডেভলপ করতে। এক কিংবা দুই মাস অতিবাহিত হওয়ার পরে সবার কাছ থেকে পজিটিভ ফিডব্যাক পেতে থাকি। মূলত সবাই চিন্তা করছিল কিছুদিন আগে আমি যে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করেছি তাদেরকে বিট করতে তাদের মতো করেই এই সংগঠনটি শুরু করেছি। তবে তারা জানত না আমার পরিকল্পনাটা সম্পূর্ণ  ভিন্ন। না বোঝাই স্বাভাবিক, শুরুর দিকেই এরকমভাবে পুরো উদ্দেশ্যটা উপস্থাপন করতে পারাটা অবশ্যই জটিল। কারন আমার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ছোট ক্ষেত্র নিয়ে কাজ করলে তা কখনোই সম্ভব না বা মাত্র ৫/১০ জন মানুষ নিয়ে কাজ করলে এক্ষেত্রেও সাকসেস করা সম্ভব না। তাই অপেক্ষা করতে থাকি সুযোগের যখন আমি নিজেকে এবং নিজের প্রতিষ্ঠানকে তার আসল রূপে উপস্থাপন করতে পারব। আমি সুযোগ খুঁজছিলাম ঐ সুযোগটা  আমাকে প্রদান করে ‘বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটি’ (যেটি দেশের আইসিটি বিভাগের অংশ)। এই সুযোগটা পাওয়ার ফলেই আজকে আমার প্রতিষ্ঠানটি স্টার্টআপ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পেরেছে ৷ ফাইনালি জুন মাসের ১ তারিখে তারা আমাদেরকে অফিশিয়ালি অফিস বুঝিয়ে দেয় এবং অন্যান্য সুযোগসুবিধা প্রদানের প্রতিজ্ঞা করে।”

এই জন্য হাইটেক পার্কের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন এবং ধন্যবাদ জানান প্রতিষ্ঠানটির সিইও ।

প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,  ইতোমধ্যে আমাদের দেশে অনেক ধরনের সংগঠন বা স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যারা ভার্চুয়ালি শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে, কাজ করছে স্কিল ডেভেলপমেন্ট নিয়ে, কেউ বা লিডারশিপ নিয়ে কেউ বা এডুকেশন সেক্টর নিয়ে। তবে আমাদের কার্যক্রম একটু ভিন্ন, এই সবগুলো প্লাটফর্মের কাজগুলোর সমন্বয়ই শুধু থাকছে না বরং পাশাপাশি যুক্ত করার চেষ্টা করছি আরও অনেক বিষয়। সাথে ইনভলভ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দারুন কিছু মেধাবী শিক্ষার্থী। যারা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে তাদের দায়িত্বগুলো সঠিকভাবে পালনের। যেখানে অনেক সংগঠন শুধুমাত্র ভার্চুয়ালি তাদের কাজ পরিচালনা করছে, সেখানে আমাদের লক্ষ্য অনলাইন প্লাস অফলাইন দুই জায়গাতেই কাজের পরিধি সমানভাবে কন্টিনিউ করা। এক্ষেত্রে আমরা সমাজের দ্বিমুখী প্রভাব ফেলতে পারব বলে আশা রাখছি।  একদিকে অধিকাংশ কর্মী থাকবে আন্ডারগ্রাজুয়েট লেভেলের যারা অনলাইন এবং অফলাইন এর মাধ্যমে কাজ করে নিজেদের জব এক্সপেরিয়েন্স ঝালাই করে নেবে, অন্যদিকে বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করে তাদের কমিউনিকেশন, লিডারশিপ, আইটি ও অন্যান্য দক্ষতা করে নিবে আরো বেশি শক্ত। হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট, মার্কেটিং, ইনফরমেশন টেকনোলজি, কন্টেন্ট ক্রিয়েশন, রিসার্চ, এডিটোরিয়াল ইত্যাদি সহ নানা ধরনের সেক্টরে বিভক্ত করে পর্যাপ্ত ট্রেনিং এর মাধ্যমে সেক্টর গুলোকে শক্তিশালী করা হয়েছে ইতোমধ্যে। যে কাজগুলো সাধারণত অন্যান্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান করে থাকে এর বাইরেও আরো অনেক কাজ করার আছে আমাদের। সেই বিষয়গুলো নিয়েও নানামুখী পরিকল্পনা ইতোমধ্যে করা হয়েছে এবং তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। পাশাপাশি মেনশনকৃত এই সেক্টরগুলোতে আন্ডার গ্রাজুয়েট স্টুডেন্টরা ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ পাচ্ছে। অর্থাৎ যেখানে আমরা পড়াশোনা করার পাশাপাশি কিছু না করার কারণে পিছিয়ে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত, গ্রাজুয়েশনের পর করতে হচ্ছে হা-হুতাশ, সেখানে স্টুডেন্টদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা রাখে প্রতিষ্ঠানটি ।

এই জায়গাগুলোতে যদি তারা পরিকল্পনা মোতাবেক  কাজ করতে পারে, তবে যুবসমাজে দারুন এক পরিবর্তন আনা সম্ভব বলেও জানান তিনি। এই অনলাইনের যুগে সময়গুলোকে কাজে লাগিয়ে এবং ইন্টারনেটের সহজলভ্যতাকে কাজে লাগিয়ে যে অনেক পজিটিভ অপরচুনিটি সৃষ্টি সম্ভব সেটি তারা প্রমাণ করতে চান এবং দেশের যুবসমাজকে পজিটিভ দিকে আনতে কন্ট্রিবিউট করতে চান। সেন্ট্রালাইজড যে ডেভলপমেন্ট হচ্ছে তা থেকেও বেরিয়ে এসে তারা তাদের কার্যক্রম রুট লেভেল পর্যন্ত পৌঁছে দিতে চান। বাংলাদেশে কাজ আছে কিন্তু দক্ষ জনশক্তি নেই এই কথা যেন কর্মকর্তারা বলতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রেখে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার চেষ্টা থাকবে বলে নিশ্চিত করেন। শুরু থেকেই বড় একটি স্টুডেন্ট কমিউনিটি তাদের সাথে কাজ করছে, তারা চেষ্টা করছেন তাদের কমিউনিটি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করতে এবং সারাদেশে তাদের কার্যক্রম ছড়িয়ে দিতে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এখন তারা বাধ্য হয়ে অনলাইনে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে তবে সবকিছু স্বাভাবিক হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। তাহলে অফলাইনেও দারুনভাবে পদচারণা রাখতে চায় এই স্টার্টআপ।

এত কম সময়ে এবং পারফরম্যান্স দেখিয়ে স্টার্টআপ মর্যাদা লাভ করে এমন প্রতিষ্ঠান খুঁজে বের করা কষ্টসাধ্য কিন্তু সেটি পেরেছে  Ascend।

তবে তার জন্য ফান্ডিং এবং সকলের সহযোগিতা অত্যন্ত প্রয়োজন। বেসিক্যালি তাদের মূল টার্গেট স্টুডেন্ট ডেভলপমেন্ট হলেও তারা ধীরে ধীরে তাদের পদচারণা বাড়াতে চান। যেহেতু সারাদেশের সকল স্টুডেন্টকে টার্গেট করে প্রতিষ্ঠানটির কাজ এগিয়ে চলছে তাই তাদের আইডিয়াটি বা কার্যক্রমটি প্রচার হলে তা তাদের জন্য আরও সহজতর হবে বলে আশা রাখে প্রতিষ্ঠানটি।

12 responses to “স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান”

  1. … [Trackback]

    […] Find More here on that Topic: doinikdak.com/news/29218 […]

  2. go now says:

    … [Trackback]

    […] Read More to that Topic: doinikdak.com/news/29218 […]

  3. Yjwmvk says:

    oral lasuna – order lasuna generic himcolin brand

  4. Efoayz says:

    purchase besivance online cheap – sildamax usa cheap sildamax online

  5. bad links says:

    … [Trackback]

    […] Read More here on that Topic: doinikdak.com/news/29218 […]

  6. Xwojpy says:

    buy benemid 500 mg online – cheap benemid tegretol online order

  7. Wqxlge says:

    gabapentin over the counter – neurontin online buy azulfidine 500mg over the counter

  8. Qmzuny says:

    purchase mebeverine – purchase pletal online buy pletal

  9. Vipean says:

    celecoxib 200mg canada – purchase urispas generic indomethacin price

  10. Cmpzvi says:

    rumalaya for sale – order rumalaya buy amitriptyline 10mg for sale

  11. Yxflax says:

    buy cambia – aspirin price buy aspirin 75 mg pills

  12. Hvid says:

    … [Trackback]

    […] Info on that Topic: doinikdak.com/news/29218 […]

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x