ঢাকা, শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৩৯ পূর্বাহ্ন
রানী রাসমনির ঘাট, যেখানে সাগরজুড়ে ঢেউয়ের নৃত্য
বার্তা প্রেরক মু রিমন ইসলাম

নীল আকাশ যেখানে পানির সঙ্গে খেলা করে,সাদা মেঘ যেখানে পাহাড়ের কোলে ঘুমায়,সূর্যমামা আগে এখানে ওঠে,তারপর হাসে;তাড়াহুড়ো করে চাঁদ এসে জলের আয়নায় তার রূপ দেখে মুগ্ধ হয়ে থমকে দাঁড়ায়;ঢেউয়ের কোলে দুলতে দুলতে ঘুমিয়ে পড়ে তারার সারি।যত দূর চোখ যায় পানির উতাল পাতাল ঢেউ আর ঢেউ।নিচে নীলচে পানি,একেক টা সাম্পান ভেসে ভেসে ভেসে ভেসে ঢেউয়ের দোলায় নাচছে সাগরজুড়ে।

ভাবছেন কাল্পনিক কিছু বলছি? না,একদমই না – এই জায়গাটার নাম রানী রাসমনীর ঘাট,

চট্রগ্রামের পাহাড়তলী উপজেলার রানী রাসমনীর ঘাট।স্থানীয় লোকের কাছে এটি সাগর পাড় বলেই পরিচিত।স্থানীয় ও বাহির থেকে ঘুরতে আসা বেশীর ভাগ পর্যটকদের মন কেড়ে নেয় এই সাগর পাড়,তাই প্রতিদিন প্রায় কয়েক হাজার মানুষের ভীড় জমে উঠে এখানে।সাগরের পাড়ে পানিতে নেমে দর্শনার্থী মেতে উঠে আনন্দ-উল্লাসে।প্রেমিক-প্রেমিকেরা সাগরের কাছাকাছি পায়ের পাতা পানিতে ভিজিয়ে বিচে হেঁটে হেঁটে ভালোবাসার কাব্য রচনায় ব্যস্ত থাকে।কেউবা প্রেমিকার হাতে হাত রেখে গেয়ে উঠে রবীন্দ্র সংগীতের দুটি লাইন।অনেকে এখানে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে আসে কিছু সুন্দর মুহুত্ব উপহার দেওয়ার জন্য।তাছাড়া সাগর পাড়ে সন্ধ্যায় সূর্যাস্থ দেখার আনন্দ উপভোগ করতে বিকেল বেলা এসে রাত অব্দি সময় কাটাতে দেখা যায় অনেককে।এখানে এসে মোবাইল ফোন বা ক্যামেরায় সেলফি তুলতে ভুল করে না কেউ।এই সাগর পাড়ে ঘুরতে আসা হৃদয় চৌধুরী নামে এক স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীর সাথে কথা হয়,সে জানায় ‘প্রায়ই এখানে এসে সূর্য্যাস্থ দেখতে ইচ্ছে করে।পরিবারের সবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে প্রায়ই এখানে আসি।তাছাড়া চট্রগ্রাম এর বাহিরের কোন আত্বিয়-স্বজন আসলে আমরা তাদেরকে এখানে ঘুরতে নিয়ে আসি’।

টিপু সুলতান জানায়,এখানের সুন্দর্যটা অনেক চমৎকার।প্রিয় জনের হাত ধরে এই সাগরপাড়ে সারাদিন হাঁটতে ইচ্ছে করে।নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক দুজন প্রেমিক-প্রেমিকার সাথে কথা বলে জানা যায়,প্রেম করার জন্য এই সাগর পাড় বড়ই উত্তম।এখানে এই মনমুগ্ধকর পরিবেশে ভালবাসা যেন বেড়ে যায় হাজার গুন।এখানে সাগরের পার ধরে প্রিয়জনের হাত ধরে হেটে হেটে যেতে ইচ্ছে করে অনেকদুর পর্যন্ত।

এখানে দর্শনার্থীদের বাড়তি আনন্দ দিতে রয়েছে ঘোড়া।২০ থেকে ৩০ টাকার বিনিময়ে এখানে আপনি ঘোড়ায় চড়ে ইচ্ছে মত ছবি তুলতে পারেন।আর ঘোড়ার মালিককে একটু বেশী টাকা দিলেই ঘোড়ায় চড়িয়ে আপনাকে সাগর পাড়ের অনেকদুর পর্যন্ত ঘুরিয়ে নিয়ে আসবে।

সাগরে জোয়ার অনেকটা ঝুকিপূর্ণ।অনেকসময় হঠাৎ করেই জোয়ার নেমে পড়ে।তখন অনেক পর্যটকই তা বুঝতে পারেনা।অনেকে সমুদ্রের কাছাকাছি থাকায় জোয়ারের পানিতে বিপদে পড়ে যান।এ জন্য সাগরপাড়ে নামার আগে জোয়ার-বাটার সময় জেনে নিলে ভাল হয়।

প্রকৃতি প্রেমী মানুষের কাছে এই সাগরপাড় আর্কশনীয় জায়গা।শহরের যান্ত্রিক জীবনের ক্লান্তি দুর করতে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন চট্রগ্রামের এই সাগরপাড়ে।দেখে আসতে পারেন সূর্যাস্থ সাগরের উতাল পাতাল ঢেউ।

2 responses to “রানী রাসমনির ঘাট, যেখানে সাগরজুড়ে ঢেউয়ের নৃত্য”

  1. … [Trackback]

    […] Info to that Topic: doinikdak.com/news/23134 […]

  2. … [Trackback]

    […] Information on that Topic: doinikdak.com/news/23134 […]

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x