ঢাকা, শনিবার ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪২ পূর্বাহ্ন
ভোলায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ডুবলো ৩০ চর, নিহত-১
Reporter Name

আর জে শান্ত, ভোলাঃ ঘূর্নিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ভোলার উপকূলীয় এলাকার ৩০টি দ্বীপচর প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্ধী হয়ে পড়েছে অন্তত ৫৫ হাজার মানুষ। দিনভর মেঘনার পানি বিপৎসীমার ৬৭টি সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। অন্যদিকে ঝড়ে গাছ চাপা পড়ে আবু তাহের (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে।

এছাড়া জোয়ারের পানিতে নষ্ট হয়েছে কমপক্ষে ১২ হাজার হেক্টর জমির আউশ ও সবজি।

প্রবল জোয়ারের চাপে জেলার ১৫টি পয়েন্টে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ভেঙ্গে গেছে ৩০ মিটার বাঁধ। বুধবার (২৬ মে) দুপুরের পর মেঘনা জোয়ার তলিয়ে যায় বিস্তীর্ণ জনপদ। ঘূর্নিঝড় ইয়াসের প্রভাবে নদী ছিলো উত্তাল। এতে উপকূলের চরাঞ্চলে তলিয়ে গেছে। ঘরবাড়ি, রাস্তাসহ বিস্তীর্ন এলাকা। ভেসে গেছে পুকুর ও মাছের ঘের। উপকূলে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন সাইক্লোন সেল্টারে। অতি জোয়ারের চাপে  কুকরী-মুকরী, চরপাতিলা, ঢালচর,সোনার চর, চরজ্ঞান, চর শাহজালাল, চর যতিন, কলাতলীর চরে ৫-৬ ফুট জলোচ্ছাস হয়েছে।

এছাড়াও ভোলার ইলিশা, রাজাপুর, কাচিয়া, ধনিয়া, শিবপুর এলাকায় জোয়ারের পানিতে নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে ভোলার অভ্যন্তরীন নৌরুটের সকল নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সরকারের পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বাবুল আক্তার জানান, বাঁধের বাইরে যেসব নিচু এলাকা রয়েছে সবগুলো তলিয় গেছে। ইতোমধ্যে শহর রক্ষা বাঁধের জন্য ৩৫ হাজার জিও ব্যাগ মজুদ রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধগুলো দ্রুত সংস্কারের কাজ করছে।

এদিকে ভোলায় ঝড়ের প্রভাবে ৩ কিলোমিটার শহর রক্ষা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এছাড়াও মনপুরা উপজেলায় ভেঙ্গে গেছে আরো ২৫ মিটার। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, জেলায় ৩২৫ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে ৭৫ কিলোমিটার বাঁধ সিসি ও জিও ব্যাগে মোড়ানো থাকলেও ২৫০ কিলোমিটার বাঁধ মাটির। যার মধ্যে প্রায় তিন কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধের মধ্যে চরফ্যাশনে ৫টি পয়েন্ট, মনপুরায় ৩টি, বোরহানউদ্দিনে ২টি, লালমোহনে ২টি, বোরহানউদ্দিনে ২টি ও তজুমদ্দিন, দৌলতখান ও সদরে ১টি করে ১৫ স্পট ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ মেরামতের কাজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন, ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বাবুল আক্তার।

অন্যদিকে ভোলার লালমোহনে ঝড়ের সময় গাছ চাপা পড়ে আবু তাহের (৪৮) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। নিহত তাহের উপজেলার চর ছকিনা গ্রামের বাসিন্দা মৃত গফুর আলীর ছেলে এবং পেশায় রিকশাচালক বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ঝড়ের সময় রাত ১০টার দিকে আবু তাহের প্রকৃতির ডাকে ঘরের বাইরে বের হন। এ সময় ঝড়োবাতাসে ঘরে পাশে থাকা একটি গাছ ভেঙ্গে তিনি গুরুতর আহত হন। রাতেই তাকে প্রথমে লালমোহন এবং পরে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে তার ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

ভোলা কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বরত জেলা ত্রান ও পূর্নবাসন কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারকে সহায়তা প্রদান করা হবে।

জেলা ত্রান ও পূর্নবাসন কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন বলেন, ভোলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পুনবার্সন করার জন্য ১ কোটি ৯৪ লক্ষ টাকার ফান্ড রয়েছে। ৪২ মেট্রিকটন ভিজিএফ চাল মজুদ রয়েছে। এছাড়াও ইতিমধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে খাদ্য বিতরণ ও যাতায়াত খরচের জন্য সাড়ে ১৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

One response to “ভোলায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ডুবলো ৩০ চর, নিহত-১”

  1. … [Trackback]

    […] Find More Info here to that Topic: doinikdak.com/news/19042 […]

Leave a Reply

Your email address will not be published.