ঢাকা, শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২৪ অপরাহ্ন
মেহেরপুরে জোসনা রানী কান্ড, থানায় মামলা, আটক-৪
Reporter Name

মেহেরপুর থেকে জাহিদ মাহমুদঃ রবিবার সকাল ১০ টা, বেশ কয়েকটি ফোন আসে সাংবাদিকের ফোনে। ফোনের বিবরণে  বামন্দী বাজারে একটি নারী সংক্রান্ত ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার সত্যতা যাচায়ে ও পর্যবেক্ষন করতে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মেহেরপুরের বামনপাড়ার আব্দুস সাত্তারের ছেলে আহসান আলী  বামন্দীর রতন লালের মেয়ে জোসনা রানীকে ফোনে বিরক্ত করত। জোসনা রানীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে এমন অভিযোগে আহসান আলীকে আটক করেছে স্থানীয় জনতা। সেখানে উপস্থিল ছিল, বাংলাদেশ তথ্য ও প্রযুক্তি লীগ মেহেরপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম, বামন্দী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য কামাল হোসেন, গাংনী উপজেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হবিবার রহমান হবি, যুবলীগ নেতা শামীম হোসেন, স্থানীয় মফিজুর,  দেলোয়ার, কাঠ মিস্ত্রী মকলেছসহ স্থানীয় অনেক উৎসুক জনতা।

এসময় সেখানে উপস্থিত হয় ডিএসবি সদস্য রাজিবুল হক। তিনি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বামন্দি পুলিশ ফাঁড়িতে ফোন দেয়। এরই মধ্যে সেখানে উপস্থিত হয় বামন্দী নিশিপুর গ্রামের অজ্ঞাতনামা এক মহিলা। মহিলার দাবী আহসান আলী তার সাবেক স্বামী। তার সাথে অমানবিক আচরণ করেছে এমন অভিযোগে ওই মহিলা আহসান আলী অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে এবং পায়ের স্যান্ডেল খুলে পিটুনী দেয়। কিছু সময় পর সেখানে বামন্দী পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ এএসআই রফিক ও কনস্ট্যাবল জুয়েল রানা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। তারপর জোসনা রানী ও আহসান আলীকে উদ্ধার করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে দীর্ঘক্ষন মিমাংসার চেষ্টা চলে। মিমাংসা না হওয়ায় এএসআই রফিক তাদেরকে গাংনী থানায় সোপর্দ করে।

এ ঘটনায় জোসনা রানী জানায়, আহসান আলী আমাকে ফোনে বিরক্ত করত এবং তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিত। এ ঘটনা স্থানীয় লোকজনকে জানালে তারা আহসান আলীকে আটক করে।

কাঠমিস্ত্রী মকলেছ আলী জানায়, আমার মোবাইল ফোন থেকে আহসান আলী জোসনার মোবাইল নাম্বার চুরি করে জোসনাকে বিরক্ত করত। আমার অজান্তে আমার ছেলেকে দিয়ে জোসনার কাছে টাকা পয়সা ও খাবার পাঠাত।

কাঠ মিস্ত্রী মকলেছের ১২ বছরের শিশু ছেলে জানান, আমার হাত দিয়ে একদিন ১হাজার টাকা, একদিন ৭শ টাকা, আরেক দিন একটি খাবারের প্যাকেট ও একটি সেভেন আপের বোতল দিয়েছে।

বাংলাদেশ তথ্য ও প্রযুক্তি লীগ মেহেরপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম জানান, সপ্তাহ খানেক আগে জোসনা আমাকে বিষয়টি জানায়। রবিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ফোন করে বলে ওই ছেলে ধরেছি। তারপর আমি ঘটনাস্থলে আসি।

ইউপি সদস্য কামাল হোসেন জানান, আহসান আলীর চরিত্র ভাল না। এই ঘটনার আগেও তার বিষয়ে আমি ৩টা শালিশ মিমাংসা করেছি।

সন্ধ্যায় গাংনী থানার ওসি বজলুর রহমান বামন্দী সিনেমা হলের সামনে থেকে মফিজুর, মকলেছ, জোসনা রানীর ভাই মেঘা লালকে থানায় নিয়ে যায়। রাতে গাংনী থানায় আসে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রসাষণ) জামিরুল ইসলাম। আটকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ ও দীর্ঘ সময় তদন্তের পর বামন্দী বাজারের রতন লালের মেয়ে জোসনা রানী ও তার ভাই মেঘলাল, নজরুলের ছেলে মফিজুল ইসলাম ও আব্দুর রবের ছেলে মকলেছুর রহমানকে নামীয় করে ৭/৮ জনকে অজ্ঞাতসামায় গাংনী থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা হয়। আহসান আলী বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করে। গাংনী থানার মামলা নং ১৭, ২৪/০৫/২০২১ইং।

গাংনী থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) সাজেদুল ইসলাম জানান, বামন্দীতে একটি চক্র জোসনা রানীকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে আহসান আলীকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল। গাংনী থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। আসামীদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

মহেরপুর জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) জামিরুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে

উল্লেখ্য, প্রতিবেদকের কাছে এ ঘটনার সকল তথ্যের ভিডিও রেকর্ড আছে।

3 responses to “মেহেরপুরে জোসনা রানী কান্ড, থানায় মামলা, আটক-৪”

  1. … [Trackback]

    […] Read More Info here on that Topic: doinikdak.com/news/18155 […]

  2. … [Trackback]

    […] Find More on that Topic: doinikdak.com/news/18155 […]

  3. … [Trackback]

    […] Find More on on that Topic: doinikdak.com/news/18155 […]

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x