ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:০১ অপরাহ্ন
রাবিতে অবৈধ নিয়োগের প্রধান ছিলেন ভিসি, সহযোগী জামাতা!
Reporter Name

ভাস্কর সরকার (রাবি প্রতিনিধি): শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও এভাবে ১৪০ জনকে নিয়োগ দিয়ে সাবেক উপাচার্য স্পষ্টতই আইন ও প্রশাসনিক রীতি-নীতি ভেঙেছেন। এ নিয়োগ দিতে গিয়ে তিনি অনিয়মের আশ্রয় নিয়েেছেন। নিয়োগের ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করেছে তদন্ত কমিটির সদস্যরা।

আজ রবিবার (২৩ মে) সকাল ১১টার দিকে এ কমিটির প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে জমা দেওয়া হয়। কমিটির প্রতিবেদনে নিয়োগের ঘটনায় প্রধান দায়ী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ড. এম আব্দুস সোবহানকে।

এ ঘটনায় প্রধান সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে তার জামাতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রভাষক এটিএম শাহেদ পারভেজকে।

এছাড়া সংস্থাপন শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলী, রেজিস্ট্রার শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার তারিকুল আলম ও পরিষদ শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার মামুন অর রশীদকে সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত করেছে তদন্ত কমিটি।

সেই ১৪০ জনের নিয়োগ বাতিল চেয়ে সরকারের কাছে সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটির সদস্যরা। সেইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়টির বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহানের বিদেশ ভ্রমণ ও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপেরও সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।

তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা গেছে, সাবেক উপাচার্যের আরেকটি দেশের নাগরিকত্ব রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো প্রমাণিত হয়েছে বিধায় বিচারের আগেই পালিয়ে যেতে পারেন আশঙ্কায় এ সুপারিশ করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ঘটে যাওয়া এত বড় অবৈধ নিয়োগ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় দুই উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারারের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করা হয়েছে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে কেবল শেষদিনে গণনিয়োগ পাওয়া ১৪০ জন নয়, স্বজনপ্রীতি ও যোগ্যতা কমিয়ে নিয়োগ পাওয়া আরো ৩৪ জন শিক্ষকের নিয়োগও বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে এম সোবহানের দেওয়া ১৪০ জনের অবৈধ নিয়োগের সুবিধাভোগী বেশ কয়েকজন শিক্ষকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই শিক্ষকদের স্ত্রী, সন্তান, জামাতাসহ বিভিন্ন নিকটাত্মীয় অবৈধভাবে নিয়োগ পেয়েছেন। এজন্য অবৈধ এ নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদেরও পরোক্ষ ভূমিকা রয়েছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক তদন্ত প্রতিবেদনে ভিসি আবদুস সোবহানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমানিত হওয়ার পরেও নিয়মের তোয়াক্কা না করে ৫ মে কাগজপত্র প্রস্তুত করে ৬ মে সবাইকে ডেকে নিয়োগ দেয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য বিদায়ী ভিসি প্রফেসর এম আবদুস সোবহান। সেদিনই শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ নিয়োগ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে।

তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হয়ে অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন নি বিদায়ী ভিসি প্রফেসর এম আবদুস সোবহান।

নিয়েগের বিষয়ে মুখ খুলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নিয়োগ হওয়ার দরকার ছিলো। যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে তারা এটা ডিজার্ভ করে। কারণ প্রত্যকে অনার্স মাস্টার্স পাশ। তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণীর চাকরী দেয়াটা যৌক্তিক সেজন্য আমি ছাত্রলীগকে এই নিয়োগ মানবিক কারণে দিয়েছি।

নিয়োগ সম্পর্কে তিনি বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ বন্ধ ছিলো। দ্বিতীয়,চতুর্থ শ্রেণী ২০১৩-২১ সালের মাঝে কোন নিয়োগ হয়নি। আমরা নিয়োগ নেয়া প্রক্রিয়া শুরু করেছিলাম, সেই নিয়োগ নেয়া প্রক্রিয়া মধ্যে হঠাৎ করে করোনা আসে। আমরা তখন বন্ধ করে দেই।

এর পরে চারপাশ থেকে গুঞ্জন শোনা যায়, কিছু কিছু শিক্ষকের মুখে তারা বলে এ নিয়োগ দেয়া যাবে না। মন্ত্রনালয় থেকে নিষেধাজ্ঞা আসবে। ডিসেম্বর ১৩ তারিখে স্থগিতাদেশ আসে আমি বিস্মিত হই। শিক্ষকরা কিভাবে আগে থেকেই জানলো। কিছু শিক্ষক ক্যাম্পাসটাকে অস্থিতিশীল করার জন্য চেষ্টা করেছে। এ নিয়োগে কারো কোন হাত নেই। ছাত্রলীগের এটা প্রাপ্তি ছিলো।

এদিকে, বিদায়ী ভিসির দেয়া চাকরীতে নিয়োগপ্রাপ্তদের যোগদান স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

3 responses to “রাবিতে অবৈধ নিয়োগের প্রধান ছিলেন ভিসি, সহযোগী জামাতা!”

  1. … [Trackback]

    […] There you can find 46577 additional Information on that Topic: doinikdak.com/news/17977 […]

  2. dewahk says:

    … [Trackback]

    […] Find More to that Topic: doinikdak.com/news/17977 […]

  3. … [Trackback]

    […] There you will find 93197 more Information on that Topic: doinikdak.com/news/17977 […]

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x