ঢাকা,রবিবার ০৪ জুলাই ২০২১, ০২:৩৫ অপরাহ্ন
সারা গায়ে গোবর মেখে চলছে করোনা-রোধ, সতর্ক করলেন চিকিৎসকেরা
দৈনিক ডাক অনলাইন ডেস্ক

ভারতের গুজরাট রাজ্যে শরীরে গোবর মাখার চর্চা চলছে।  কারণ তাদের বিশ্বাস, করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।  এ নিয়ে দেশটির গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে।

তবে সে বিষয়ে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।  বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এই পদ্ধতির কার্যকারিতার কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। বিপরীতে গোবরের মাধ্যমে অন্যান্য রোগ ছড়ানোর ব্যাপক ঝুঁকি রয়েছে।

ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, কোভিড মহামারীতে বিপর্যস্ত ভারতে এর মধ্যেই সোয়া দুই কোটির বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে।  করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশটির প্রায় আড়াই লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করেছেন।

বিশেষজ্ঞরা অবশ্য এ সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে আসছেন; আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়ে পাঁচ থেকে ১০ গুণ বেশি হতে পারে বলে ধারণা তাদের।
ভারতজুড়ে এখন অসংখ্য নাগরিককে হাসপাতাল শয্যা, অক্সিজেন ও ওষুধ পেতে লড়তে হচ্ছে; চিকিৎসার অভাবে মারা পড়ছেন বহু মানুষ।

এই পরিস্থিতিতে পশ্চিম ভারতের গুজরাট রাজ্যের অনেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে কিংবা করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হতে সাহায্য করবে এই বিশ্বাসে সপ্তাহে একদিন করে বিভিন্ন ‘গো আশ্রমে’ হাজির হয়ে নিচ্ছেন ‘গোবর চিকিৎসা’।

হিন্দু ধর্মে গরুকে প্রাণ ও পৃথিবীর পবিত্র প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এ ধর্মে বিশ্বাসীদেরকে ঘর পরিষ্কার ও প্রার্থনার নানান অনুষঙ্গে গোবর ব্যবহার করতে দেখা গেছে।

গোবরের ঔষধি ও জীবাণুরোধী বৈশিষ্ট্য আছে বলে ধারণা এই বিশ্বাসীদের।

ভারতের বেসরকারি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির সহযোগী ব্যবস্থাপক গৌতম মনিলাল বরিষা বলেন, ‘আমরা দেখছি, এমনকি চিকিৎসকরাও এখানে আসছেন। তারা বিশ্বাস করেন, এই চিকিৎসা তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে এবং তারা কোনো ধরনের ভয় ছাড়াই রোগীদের কাছে যেতে ও তাদের পরিচর্যা করতে পারবেন।’

রয়টার্স জানিয়েছে, গোবর ও গরুর প্রস্রাবের মিশ্রণ গায়ে মেখে শুকানোর অপেক্ষায় থাকার সময় এই ‘চিকিৎসা’ গ্রহণকারীরা ‘গো আশ্রমের’ গরুগুলোকে জড়িয়ে ধরেন বা নানান কায়দায় সম্মান জানান ও যোগব্যায়াম করেন। শুকিয়ে যাওয়া মিশ্রণ পরে দুধ বা ঘোল দিয়ে ধুয়ে ফেলা হয়।

ভারত ও বিশ্বজুড়ে থাকা চিকিৎসকরা ধারাবাহিকভাবে কোভিড-১৯ এর অপ্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে সতর্ক করে আসছেন। এই ধরনের চর্চা সুরক্ষার একটি ভুয়া বোধ তৈরি ও স্বাস্থ্য সমস্যাকে জটিল করে তুলতে পারে বলে মত তাদের।

‘গোবরে কোভিডমুক্তির’ আশায় ‘গো-আশ্রমে’ দলে দলে মানুষের উপস্থিতি উল্টো করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়াতেও ভূমিকা রাখতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *