ঢাকা, বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৫৭ অপরাহ্ন
আপদকালীন সময়ে দেশে কত টন অক্সিজেন উৎপাদন করা যাবে?
Reporter Name

“দেশে বর্তমানে সাধারণ ও কোভিড রোগী মিলে ৭০-৮০ টন অক্সিজেন প্রয়োজন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের পিক-এর সময় সর্বোচ্চ অক্সিজেন চাহিদা ছিল ২১০ টন পর্যন্ত। এই মুহূর্তে দেশে দৈনিক অক্সিজেন উৎপাদনে সক্ষমতা রয়েছে ২২০ থেকে ২৩০ টন। তবে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে অক্সিজেন সংকটের কারণে বর্তমানে ভয়াবহ অবস্থা চলছে। যেকোনো সময় একই রকম অবস্থা যাতে আমাদের দেশে না হতে পারে সেজন্য সরকারিভাবে আপদকালীন সময়ের জন্য এই মুহূর্তে দেশে প্রায় ৯০০ টন অক্সিজেন মজুদ রাখা হয়েছে।

দেশে দৈনিক ২৩০ টন অক্সিজেন উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন।

বৃহস্পতিবার অনলাইন জুম অ্যাপের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল এসোসিয়েশন কর্তৃক আয়োজিত “কোভিড-এর ২য় ঢেউ মোকাবেলায় সরকারি-বেসরকারি প্রস্ততি ও জরুরি অক্সিজেন ব্যবস্থাপনা” বিষয়ক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল এসোসিয়েশনের সভাপতি মুবিন খানের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলী নূর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের মহাসচিব আনোয়ার হোসেন খান এমপি, স্বাচিপের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ, ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. টিপু মিয়াসহ দেশের বিভিন্ন প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য হাসপাতাল প্রতিনিধিরা।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের অন্যান্য সরকারি হাসপাতালে আরো ৪৫০ টন অক্সিজেন মজুদ রয়েছে। আগামী মাসে একটি বেসরকারি সংস্থা ৪০টন অক্সিজেন সরবরাহ করবে। জুলাই মাসে অন্য একটি বেসরকারি সংস্থা আরো ৪০ টন অক্সিজেন সরবরাহ করবে। এর ফলে, দেশে কোভিডকালীন ৩য় ঢেউ-এর মাত্রা স্বাভাবিক থাকলে তা মোকাবেলা করতে কোন সমস্যা হবে না। তবে, কোভিডে আক্রান্তের মাত্রা নিয়ন্ত্রণহীন হলে এবং মানুষ অস্বাভাবিকভাবে আক্রান্ত হলে শুধু সেক্ষেত্রেই বড় রকম সমস্যা হতে পারে। আর সেরকম বিপর্যয় যাতে না হতে পারে তার জন্যই সরকারকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে লকডাউনসহ জরুরি কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে।

জাহিদ মালেক স্বপন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও কোভিডকালীন ১৮টি জরুরি নির্দেশনাসহ বেশ কিছু ঘোষণা দিয়েছেন। দেশের মানুষ সরকারের জরুরি নির্দেশনাগুলি মেনে চললে এবং আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে মানুষ বেপরোয়া চলাফেরা, কেনাকাটা, ভ্রমণ না করলে আশা করা যায় করোনার ৩য় ঢেউ দেশে এলেও বাংলাদেশ তা ভালোভাবেই মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে।”

বর্তমানে দেশের হাসপাতালগুলিতে অক্সিজেন ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “করোনা চিকিৎসায় রোগীর খারাপ অবস্থা হলে তখন অক্সিজেন মূল ভূমিকা পালন করে। একারণে অতি দ্রুত দেশের সরকারি ১৩০টি হাসপাতালে এখন সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এই ১৩০টি হাসপাতালের মাধ্যমে এখন প্রায় ১৬ হাজার শয্যায় অক্সিজেন বেড কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ঢাকা নর্থ সিটি কর্পোরেশনের ১০০টি আইসিইউ বেডে মানুষ এখন কোভিড চিকিৎসা নিচ্ছে। খুব শীঘ্রই সেখানে আরো ১০০টি আইসিইউ বেড স্থাপন করা হচ্ছে। এই উদ্যোগগুলি দেশে কোভিড চিকিৎসায় বিরাট অবদান রাখবে।”

ভ্যাকসিন প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, “ভারতের সেরাম কোম্পানির সঙ্গে আমাদের ৩ কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের চুক্তি থাকলেও সে দেশের বর্তমান ভয়াবহ অবস্থার কারণে চুক্তি অনুযায়ী সব ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না। তবে ভ্যাকসিন নিতে রাশিয়ার সঙ্গে সরকারের কথা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে শীঘ্রই চুক্তি হবে আমাদের। পাশাপাশি, চীন ১২ মের মধ্যে ৫ লাখ ভ্যাকসিন দিচ্ছে। চীন সরকারের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। দ্রুতই চীনের ভ্যাকসিন নিয়ে একটি সিদ্ধান্ত চলে আসবে। একই সঙ্গে, অ্যাস্ট্রেজেনেকার ভ্যাকসিন ভারত ছাড়া বিশ্বের অন্য যে দেশগুলি উৎপাদন করছে আমরা সেই দেশগুলির সঙ্গেও যোগাযোগ করছি। সব মিলিয়ে আশা করা যায়, খুব দ্রুতই ভ্যাকসিন সংকট কেটে যাবে।

ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে যুক্ত হয়ে জানান, করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে বেশি মানুষকে টিকা দিতে হবে। সরকার যাতে দ্রুতই ভ্যাকসিন আমদানি করতে সক্ষম হয় সেজন্য সরকারের সকল বিভাগ সক্রিয় রয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল এসোসিয়েশনের সভাপতি মুবিন খান বলেন, ‘দেশের ক্রান্তিলগ্নে যখনই সরকার ডেকেছে তখন দেশের প্রাইভেট মেডিকেল এগিয়ে এসেছে। আগামীতেও যখনই সরকার ডাকবে প্রাইভেট মেডিকেলগুলি সেভাবেই সরকারের পাশে দাঁড়াবে। করোনাকালীন এই দুর্যোগেও সরকারের অনুরোধে প্রায় অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতাল কোভিড ডেডিকেটেড শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে।’

 

3 responses to “আপদকালীন সময়ে দেশে কত টন অক্সিজেন উৎপাদন করা যাবে?”

  1. … [Trackback]

    […] Find More on that Topic: doinikdak.com/news/13472 […]

  2. whoah this blog is great i love reading your posts. Stay up the good work!

    You realize, a lot of individuals are looking round for this information, you could
    help them greatly.

  3. … [Trackback]

    […] Read More on that Topic: doinikdak.com/news/13472 […]

Leave a Reply

Your email address will not be published.

x