আব্দুল মুমিন রূপগঞ্জ প্রতিনিধি: ছোট্ট কাল থেকেই জামদানী ব্যবসা করেন শরীফ মিয়া। দুই ঈদ আর বিভিন্ন পূজাপার্বনে বছরে ৭/৮ লাখ টাকা আয় করেন তিনি। এক বছর ধরে করোনার কারনে ব্যবসা বন্ধ। তিনি বলেন, জমানো টাকা শেষ। ঋণ করে সংসার চালাচ্ছি। লকডাউন আর করোনায় সব লন্ড ভন্ড করে দিয়েছে। জমানো ব্যবসাটা ধ্বংস হয়ে গেছে। কারিগররা জামদানি তৈরি করতে পারছে না। আমরাও ব্যবসা করতে পারছি না।
এ অবস্থা আরো দীর্ঘ হলে ফকির হয়ে যামু ভাই। আল্লাহ ই ভাল জানেন জীবন জীবিকা চালাব কিভাবে আর বউ পোলাপান লইয়্যা ঈদই করমু কেমনে?? তারপরও দোয়া করি আল্লাহ দ্রুত করোনা মহামারি উঠিয়ে নেক। আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুন।” “করোনা আমাগো শেষ কইরা দিছে। করোনা আর লকডাউন আমার রিজিক কাইরা নিছে। এহন অলস সময় লুডু খেইলা সময় কাটাই। ঈদে বউ পোলাপানগো কিছু কিনে দেয়ার মতো টাকা নাই। সরকার হগলতরে প্রণোদনা দিতাছে। অথচ জামদানিশিল্পীরা বাংলাদেশরে বিশ্বদরবারে তুইলা ধরে। জামদানি শিল্পীগো খবর নেয় না কেউ।” এভাবেই মনের ক্ষোভে কথাগুলো বললেন রূপগঞ্জের জামদানি শিল্পী সজিব মিয়া। ঈদ কিংবা পার্বণের সময় জামদানির চাহিদা বেশি থাকায় ওই সময় জামদানিশিল্পীরা ব্যস্ত সময় কাটান। ঈদের আগে নাওয়া-খাওয়ার ফুসরতটুকু পান না তারা। কিন্তু এবারের চিত্র ঠিক উল্টো। এবার জামদানিশিল্পীরা বেকার ও অলস সময় কাটাচ্ছেন। আগের বছরগুলোতে ভারত, সৌদি, দুবাই, ইন্দোনেশিয়ায় জামদানি শাড়ি রপ্তানি করা গেলেও এবার লকডাউনের কারণে তা সম্ভব হয়নি। ফলে ১০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন থেকে বঞ্চিত হয়েছে দেশ। বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে বাংলাদেশকে দাঁড় করিয়ে দিতে যে শিল্পীরা শ্রম-ঘাম ঝরাচ্ছেন তাদের জন্য নেই সরকারি প্রণোদনার ব্যবস্থা। ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত জামদানিপল্লির ১০ হাজার শিল্পীর মাথায় হাত।
নোয়াপাড়ার জামদানিপল্লি ঘুরে দেখা গেছে, জামদানি পল্লিতে আগের মতো খুট-খাট শব্দ নেই। নেই কোলাহল। লকডাউনের কারণে বন্ধ রয়েছে জামদানি কারখানাগুলো। জামদানি বিক্রির হাটও বন্ধ। অথচ প্রতিবছর ঈদ এগিয়ে আসলে নাওয়া-খাওয়া ভুলে কারিগররা কে কত শাড়ি তুলতে পারেন তা-নিয়ে চলতো প্রতিযোগিতা। এবার চিত্র ঠিক এর উল্টো। দেখে মনে হবে যেন এক ভুতুড়ে নগরী। আবার তাঁতিরা শুয়ে-বসে অলস সময় পার করছেন। কেউ লুডু খেলা অথবা আড্ডা দিয়ে সময় কাটাচ্ছেন। তবে কোনো তাঁতি স্বল্প পরিসরে জামদানির কাজ করলেও বিক্রি করতে পারছেন না। তাঁত বুননের কাজ না থাকায় কয়েকজন তাঁতিকে কাঁচামালসহ রমজানের বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করতে দেখা যায়। জামদানিশিল্পীরা বলেন, ঈদে দেশের বাজার ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, মিসর, সৌদি আরব, দুবাই, বিট্রেনসহ বিভিন্ন দেশে জামদানি শাড়ি রপ্তানি হতো। লকডাউনের কারণে রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। ফলে ১০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন থেকে বঞ্চিত হয়েছে দেশ।
তাঁতিরা বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের কারণে তেমন কোনো ব্যস্ততা নেই। কর্মহীনভাবে দিন কাটছে তাদের। তবে কয়েকজন শাড়ি তৈরি করলেও তা বিক্রি করতে পারছেন না। সংসার চালাতে গিয়ে দুচোখে শর্ষে ফুল দেখছেন তারা। শিল্পী ঝর্না বেগম, সাবেকুন, বিউটি আক্তার, আতিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা ঘাম জড়াইয়া একটা শাড়ি বানাই। এই শাড়ি সারা বিশ্বে চলে। কিন্তু আমাগো দাম নাই।” মহাজন এরশাদ, শরীফ, ইসমাঈল, আনোয়ার, মজিবুর বলেন, আগে ঈদ এলে ভারত, সৌদি, দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে জামদানির চাহিদা থাকত। লকডাউনের কারণে সব শেষ। জামদানি পল্লী বিসিকের সভাপতি জহিরুল ইসলাম বলেন, লকডাউনের কারণে শতকরা ৯০ ভাগ তাঁতি কর্মহীন হয়ে কষ্টে দিন পার করছে। তাদের প্রণোদনার দাবি জানাচ্ছি।
… [Trackback]
[…] Find More here to that Topic: doinikdak.com/news/13025 […]
… [Trackback]
[…] Here you can find 37688 additional Information to that Topic: doinikdak.com/news/13025 […]
… [Trackback]
[…] Here you will find 55584 more Information on that Topic: doinikdak.com/news/13025 […]
… [Trackback]
[…] There you will find 16086 additional Information on that Topic: doinikdak.com/news/13025 […]
… [Trackback]
[…] Read More to that Topic: doinikdak.com/news/13025 […]
… [Trackback]
[…] Find More here on that Topic: doinikdak.com/news/13025 […]
… [Trackback]
[…] Read More on to that Topic: doinikdak.com/news/13025 […]
… [Trackback]
[…] Read More on on that Topic: doinikdak.com/news/13025 […]
… [Trackback]
[…] Information on that Topic: doinikdak.com/news/13025 […]
… [Trackback]
[…] Read More on to that Topic: doinikdak.com/news/13025 […]