সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্রয়াত সভাপতির শূন্য পদ পূরণে করণীয় নির্ধারণ ইস্যুতে ডাকা ‘বিশেষ সাধারণ সভা’ এবং পরবর্তী প্রেক্ষাপট নাটকীয়তায় রূপ নিল।
আইনজীবী সমিতির শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে মঙ্গলবার দুপুরে শুরু হওয়া এই সভার সভাপতিত্ব কে করবেন, তা নিয়ে বিবাদে জড়ান আইনজীবীরা। একপর্যায়ে আইনজীবী সমিতির বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির সহসভাপতি মুহাম্মদ শফিক উল্ল্যা মঞ্চে দাড়িয়ে বলেন তিনি এই সভার সভাপতিত্ব করবেন। তবে সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল এসময় বলেন, ‘আপনি এই সভায় সভাপতিত্ব করবেন এধরনের কোনো কার্যবিবরণী পাশ হয়নি। এখানে তো সিনিয়র আরেকজন সহসভাপতি আছেন।’
এরমধ্যেই সহসভাপতি মুহাম্মদ শফিক উল্ল্যা মঞ্চে দাড়িয়ে বলেন, ‘আমিই আজকের সভার সভাপতি। এই সভা থেকে ঘোষণা করছি, আজ থেকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এএম আমিন উদ্দিন (বর্তমানে অ্যাটর্নি জেনারেল)।’
মিলনায়তনে উপস্থিত আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা এসময় করতালির দিয়ে প্রস্তাবে সমর্থন দেন। তবে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা ভুয়া ভুয়া বলে তখন চিৎকার করেন। একপর্যায়ে সমিতি সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল আজকের বিশেষ সাধারণ সভা মুলতবি ঘোষণা করেন।
হৈ-হুল্লোড়ের আবেশের মধ্যেই বিকেলে আইনজীবী সমিতির প্যাডে আলাদা দুটি বিজ্ঞপ্তি আসে। সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিশেষ সাধারণ সভা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কোনো আলোচনা ও সিদ্ধান্ত ব্যতিরেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করা হয়েছে।’
অপরদিকে, সমিতির সহ-সভাপতি মুহাম্মদ শফিক উল্ল্যাসহ কমিটির ৭ জনের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুল মতিন খসরুর মৃত্যুতে গঠনতন্ত্রের ১৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সভাপতির শূন্য পদ পূরনের লক্ষ্যে সমিতির সদ্য বিদায়ী সভাপতি ও সিনিয়র আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিনের নাম আজকের সভায় সভাপতি পদে প্রস্তাব করা হয়। এই সভায় আর কোন নাম সভাপতি পদে প্রস্তাব না আসায় উপস্থিত সকল সদস্য বিপুল করতালি ও কণ্ঠভোটের মাধ্যমে সমর্থন প্রদান করলে জনাব এ. এম. আমিন উদ্দিনকে সভাপতি পদে ২০২১-২০২২ইং মেয়াদের অবশিষ্ট সময়ের জন্য নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়।’
গত ১০ ও ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সভাপতি নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু। আর টানা দ্বিতীয়বার সম্পাদক নির্বাচিত হন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। আইনজীবী সমিতির এই নির্বাচনে মোট ১৪টি পদের মধ্যে ৮টি পদে বিজয়ী হন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত প্রার্থীরা।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সমর্থিত প্রার্থীর বিজয়ী হন ৬ টি পদে। এরপর করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ১৪ এপ্রিল ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মারা যান সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি আব্দুল মতিন খসরু। তার সভাপতির শূন্যপদ পূরণের লক্ষ্যে করণীয় নির্ধারনে ৪ মে ”বিশেষ সাধারণ সভা” আহ্বান করা হয়। সে সভা আজ নাটকীয়তায় রূপ নেয়।
নিউজ সোর্সঃ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদ নিয়ে নাটকীয়তা