ক্ষমতা তালিবানের হাতে যেতই, কিন্তু এত তাড়াতাড়ি? ভাবেননি কেউই। শেষ কয়েকদিন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিল তালিবানি বাহিনী। তারই চূড়ান্ত রূপ দেখা গেল রবিবার। ২০ বছর পর আফগানিস্তানে ক্ষমতা কার্যত দখল করে নিল তালিবান। হার মেনে বর্তমান সরকার দ্রুত ক্ষমতা হস্তান্তরে রাজি হয়ে গেল কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই। বিশ্ব-রাজনীতির টানটান এক চিত্রনাট্যের সামনে বসে হাঁ হয়ে রইল দুনিয়া।
শেষ কয়েকদিন ধরে উত্তর থেকে দক্ষিণে একের পর প্রদেশ দখল করতে কাবুলের দিকে এগিয়ে আসছিল তালিবান। বিভিন্ন প্রদেশ থেকে নিরাপত্তার খোঁজে রাজধানীতে আশ্রয় খুঁজে নিয়েছিলেন অসংখ্য মানুষ। শহরের রাস্তায়, মাঠে, তাঁবুতে দিন কাটাতে শুরু করেছিলেন তাঁরা। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবর, শনিবার রাত কার্যত বিনিদ্র কেটেছে কাবুলের। সকালে উঠেই কেউ সপরিবারে গিয়েছেন বিমানবন্দরে। ব্যাঙ্কের সামনে পড়েছে লম্বা লাইন। ভিটে ছেড়ে যাওয়ার আগে শেষ সম্বলটুকু নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন অনেকেই। সকাল থেকে কাবুলের রাস্তায় প্রবল ট্র্যাফিক জ্যাম, গাড়ির ঠেলাঠেলি জানান দিয়েছে, আতঙ্ক ঢুকেছে মানুষের মনে। তাঁরা হয়ত মনে মনে জানতেনই, আজই ‘নসিব’ বদলে যাবে কাবুলের।
রবিবার ঘুম ভেঙে উঠে জানলা খুলেই চমকে গিয়েছিলেন কাবুল লাগোয়া জালালাবাদের বাসিন্দারা। ওই শহরে রাতের অন্ধকারে ঘরের বাইরে, রাস্তার মোড়ে নিজেদের পতাকা টাঙিয়ে দিয়েছিল তালিবান। নিঃশব্দে দখল হয়ে গিয়েছিল শহর। সরকারি ভবনের উপরে উড়তে শুরু করেছিল তালিবানি পতাকা। কাবুলের পাশের ওই শহর দখলের খবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে গিয়েছিল বেলা গড়াতেই। মানুষ তখনই বুঝতে পেরেছিলেন, তালিবানের কাছে সম্পূর্ণ নত হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। সেই জন্যই হার স্বীকার করে পলায়নের পথ নিয়েছিলেন অনেকে।
এর পরেই দুপুরে খবর আসতে শুরু করে, কাবুলের শহর প্রান্তে এসে হাজির হয়েছে তালিবান। তবে জঙ্গিদের তরফ থেকে বার্তা দেওয়া হয়, কোনও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চায় না তারা। শুধু ক্ষমতা তুলে দিতে হবে হাতে। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে খবর ছড়ায়, তালিবান ঢুকতে শুরু করেছে কাবুলে। শহরের রাস্তায় অস্ত্র নিয়ে ঘুরতে শুরু করেছে তালিবান। তালিবান প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতি ভবনেও পৌঁছে গিয়েছে বলেও শোনা যায়।