হীমেল মিত্র অপু,স্টাফ রিপোর্টারঃ নওগাঁর সদর উপজেলার শৈলগাছী ইউনিয়নের চকচাপাই গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে রিতা বেগম নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু গৃহবধূ সদর উপজেলার চকচাপাই গ্রামে মোসলেম উদ্দিন প্রামানিকের স্ত্রী। আজ (২৭ মে) বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় নওগাঁ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল মান্নান মিয়া বলেন, গত ৩০ এপ্রিল রাতে নওগাঁ সদর উপজেলার শৈলগাছী ইউনিয়নের চকচাপাই গ্রামের মোসলেম প্রামানিকের স্ত্রী রিতা বেগম অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুত্বর আহত হন। পর দিন বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে তিনি মারা যান। এই ঘটনায় নিহত রিতা বেগমের মা রোকেয়া বেওয়া বাদী হয়ে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে রিতা বেগমে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে প্রতিপক্ষ আলামিন প্রামানিক, সানোয়ার প্রামানিক ও জলিল প্রামানিকের বিরুদ্ধে নওগাঁ সদর থানায় মামলা করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানতে পারেন গত ২৪ এপ্রিল একটি অজ্ঞাতনামা একটি নাম্বার থেকে রিতা বেগমের প্রতিবেশী ময়েন উদ্দিনের মোবাইলে একটি ক্ষুদে বার্তা (এসএমএস) আসে। ওই ক্ষুদে বার্তায় রিতা বেগম ও তাঁর পরিবারকে পুড়িয়ে মারার হুমকি দেওয়া হয়। সেই ক্ষুদে বার্তার পরিপ্রেক্ষিতে রিতা বেগম গত ২৯ এপ্রিল জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষ আলামিন প্রামাণিক, সানোয়ার প্রামানিক ও জলিল প্রামানিকের বিরুদ্ধে নওগাঁ সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
এই ঘটনার পর দিন গত ৩০ এপ্রিল রাতে রিতা বেগম অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুত্বর আহত হন এবং ১ মে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। অজ্ঞাতনামা মোবাইল নাম্বারের সূত্র ধরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ মোবাইল নাম্বারটির মালিক সাইফুল ইসলামকে শনাক্ত করেন। পুলিশের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুল ইসলাম দাবি করেন, গত ২৪ এপ্রিল মোবাইলসহ তাঁর নাম্বারটি রাণীনগর উপজেলার ত্রিমোহনী বাজার থেকে হারিয়ে যায়। পরবর্তীতে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মোবাইলটি রিতা বেগমের বাসা থেকে উদ্ধার করে। হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোন ও সিমটি উদ্ধারের পর জিজ্ঞাসাবাদে রিতা বেগমের মেয়ে আরিফা খাতুন (১৫) এসএমএস ও রিতা বেগমের মৃত্যুর ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ দেন। গত বুধবার আরিফা খাতুন বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় স্বাক্ষীর ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাসাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে রিতা বেগমের মৃত্যুর ঘটনার বিবরণ দেন। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার একেএম মামুন খান চিশতী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর র্সাকেল) আবু সাঈদ, সহকারী পুলিশ সুপার (ডিএসবি) সুরাইয়া খাতুন, নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।